বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
লেখা ও ছবি: এম খোকন সিকদার
এম খোকন সিকদার।।
দূর থেকেই চোখে পড়বে লাল আর সবুজের মাখামাখি। কাছে গেলে স্পষ্ট হবে শাপলা ফুলের এক প্রাকৃতিক স্বর্গ। দেখেই চোখ জুড়িয়ে যায়। আগাছা আর লতাগুল্মে ভরা বিলের পানিতে ফুটে থাকা হাজার হাজার লাল শাপলা দেখতে কার না ভালো লাগে!
সূর্যের সোনালি আভা শাপলাপাতার ফাঁকে ফাঁকে পানিতে প্রতিফলিত হয়ে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় বিলের সৌন্দর্য।
নৌকা কিংবা হাঁটুপানি মাড়িয়ে বিলের ভেতর ঢুকলে মনে হবে বাতাসের তালে তালে এপাশ-ওপাশ দুলতে দুলতে হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে শাপলারা। সে হাসিতে বিলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে আনন্দধারা।
লেখা ও ছবি: এম খোকন সিকদার
আরও পড়ুন
দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে নৌবাহিনী
দলে গুরুত্বহীন খালেদা!
বন্যাদুর্গতদের নৌবাহিনীর খাদ্য সহায়তা
জায়গাটি ঢাকার খুব কাছেই। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজের পাশে। এটিকে সবাই শাপলার বিল নামে চিনলেও এর মূল নাম শিমুলিয়া কুলাদি বিল। ফুল ফোটার পর থেকেই পাথরে বন্দি জীবন কাটানো মানুষ প্রশান্তির আশায় ছুটে আসেন এ বিলে।
লাল, সাদা ও বেগুনি রঙের শাপলা জন্মে এ বিলে। তবে লাল শাপলাই বেশি। সাধারণত আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিলে শাপলা থাকে। সেখানে বেশ কয়েকটি ছোট নৌকা রয়েছে, চাইলে সেগুলোতে শাপলাপ্রেমীরা ঘুরে বেড়াতে পারেন ঘণ্টা চুক্তিতে।
শরতে নীল-সাদা-লাল শাপলার গালিচা পাতা বিলে নেই নাগরিক কোলাহল, আছে শুধু গন্ধ-সুধা আর অনাবিল এক বুনো সৌন্দর্য।
বিশাল বিলের থই-থই পানির বুকে মাথা উঁচু করে আছে এই লালের সমারোহ। শাপলা-শালুকের এই জলে সকালে আড়মোড়া ভাঙে ফিঙ্গে, শালিক, পানকৌড়ির দল। এরই মাঝে ছোট্ট মেয়ে লামিয়া মনের আনন্দে শাপলা ফুল তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
আষাঢ়-শ্রাবণ থেকেই পানি বাড়তে থাকে এই বিলে। তখনই শুরু হয় শাপলার বিস্তার। সাথে খলসে, পুঁটি, কই, শিংয়ের খুনসুটি।
লেখা ও ছবি: এম খোকন সিকদার
এখানে দিগন্ত জোড়া মেঘের নিচে পাতার বিছানা। ফাঁকে-ফাঁকে ফুটে আছে গোলাপি আভা। নৌকা করে অগণিত পদ্মের পাশে কাটিয়ে দেয়া যায় পুরো একটি বেলা।
শহরঘেঁষা এলাকা হওয়ায় অনেকেই আসেন এই ফুলের রাজ্যে। লক্ষ্য ইট-পাথরের দঙ্গল দূরে ঠেলে মুক্ত বাতাসে এক বুক শ্বাস। লাওয়েল বিলে যেতে তিনশ ফুট সড়ক ধরে প্রথমে রূপগঞ্জের জিন্দাপার্ক, তারপর এর গা-ঘেঁষা সরু সড়ক ধরে এগুলেই মিলবে এই শাপলা-পদ্মের জলা।