শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
হাদীস শরীফে আছে-“উত্তম স্ত্রী হলো, যখন তুমি তার দিকে তাকাও, সে তোমাকে আনন্দিত করে। যখন তাকে আদেশ করো, তখন সে আনুগত্য করে,আর যখন তুমি স্থানান্তরে যাও, তখন সে তার ইজ্জত-আব্রু রক্ষা করে এবং সম্পদ হিফাযত করে।”
এমন উত্তম নারী পাওয়া আজকাল কল্পনামাত্র। এখনকার শিক্ষিত নারীরা স্বামীকে আর মানতে চায় না। নারীরা এখন যত বেশি শিক্ষিত হচ্ছে ততই তারা নোংরা চরিত্রের হচ্ছে, বেয়াদব হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে আনন্দ পাওয়াটা এখন খুব ভাগ্যের ব্যাপার। কত যে স্বামী নিরানন্দ জীবন কাটাচ্ছে বউ থাকা সত্বেও। অনেক পুরুষের জীবন কাহিনী আমি শুনেছি, দেখেছি। বেশির ভাগই নারী খারাপ প্রকৃতির, স্বামীর অবাধ্য। আর যারা চাকুরীজীবি তারা তো স্বামীর উপর অনেক পাওয়ার দেখায়। বুঝলাম তুমি চাকুরী করো, টাকার কুমির, টাকার মেশিন, তাই বলে স্বামীর উপর এতো অত্যাচার, এতো ঘেন্না, এতো অবহেলা ? স্বামীকে চাকরের মতো খাটানো ? অনেক স্ত্রী স্বামীর কোন আদেশ নিষেধ মানে না। আনুগত্য মানে না। তাহলে স্বামীর মানে কি, স্বামী শব্দের অর্থ কি ?
আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব লন্ডন-আমেরিকা বা অন্যান্য উন্নত দেশে আছে। তাদের অনেকেরই জীবন কাহিনী আমার জানা, শোনা। বউয়ের কাছে তাদের কানা-কড়িও দাম নেই। বিশেষ করে যারা বিয়ে করে বউয়ের মাধ্যমে বিদেশ গেছে, তাদের চোখের জল ফেলার আর জায়গা নেই। তাদের থেকে ক্রীতদাস যেন অনেক ভালো। বউ বাইরে ঘোরাফেরা করতে স্বামীর কোন অনুমতি নেয়ার দরকার মনে করে না। বাসায় বয়ফ্রেন্ড নিয়ে আসে, স্বামীই তার সেবা-যত্ন, আদর, আপ্যায়ন করাতে হয়। বউ বাইরে যায়, কবে ফিরে আসবে, না আসবে স্বামী কিছুই জানে না। এ-ই হচ্ছে বাইরের দেশের পরিস্থিতি। স্বামী বেটা কত যে বেকায়দায়, সমস্যায়, শুধু তিনিই জানেন। আর বউয়ের ইজ্জত-আব্রু নিয়ে কি কথা বলবেন তিনি।
বউয়ের কর্তব্য হলো, স্বামীর সম্পদ দেখে-শুনে রাখা। হিফাজত করা। স্বামীর অনুমতি ছাড়া চুল পরিমাণ কিছু অন্যত্র না নেয়া। কিন্তু এখন আর এসব ভাবাই যায় না। স্বামীর সম্পদ, টাকা-পয়সা অপব্যয় তো করছেই, চুরি করছে, ডাকাতি করছে, করছে কত রকমের জালিয়াতি। বিদেশে থাকা স্বামীর টাকা ভাইয়ের, বাপের একাউন্টে রাখছে। স্বামীর পাঠানো টাকায়, ভাইয়ের নামে, বাপের নামে বাড়ি করছে, জমি করছে। অনেক বিদেশি স্বামী দেশে এসে এ-ই অবস্থা দেখে কান্নায় ভেংগে পড়ে, অনেকে আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজ করতেও দ্বিধাবোধ বা ভয় করেনি, পিছু হটেনি। বউয়ের এ প্রতারণায় আর বুক ধরে রাখতে পারে না অনেকেই । তাই শেষ বিদায় নেয়া ছাড়া তাদের আর কোন পথ খোলা দেখেনি।
হাদিস শরীফে এসেছে-“তার কোনো নামাজ কবুল হয় না, কোনো নেক আমল উপরে উঠানো হয় না-যতক্ষণ স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট না হবে।”
(সহীহ ইবনে হাববান, হাদিস নং ৫৩৫৫)
স্বামীকে অসতুষ্ট করা এখন নারীদের গুণই বলা যায়। এ ব্যাপারে তারা স্বামীর সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে, বা দেখায়। সিলেটে থাকেন এমন একজন শিক্ষক ব্যাপারে জানি, যিনি চান তার স্ত্রী তার সাথে সিলেটে থাকুক। অথচ সে চায়, ঢাকাতে থাকবে। এবং থাকছেও। এখানে কি স্বামীর মনে আঘাত, বা কষ্ট দিচ্ছে না ? বাজার থেকে অনেক জিনিস স্বামী পছন্দ করে আনলে অনেক স্ত্রী নাপছন্দ করে, এবং তুচ্ছতাচ্ছিল্য দেখান। স্বামীর সাথে এমন করাটা কি ঠিক ? যদি স্বামীর প্রতি এমন আচরণ কেউ দেখায়, তাহলে এ ব্যাপারে হাদিসটি কি বলছে ? তার কোনো নামাজ কবুল হবে না। কোন নেক আমল উপরে উঠানো হবে না। নামাজ এমন একটি ইবাদত, যা স্বয়ং আল্লাহর জন্য আদায় করা হয়। অথচ সেই নামাজই আল্লাহ কবুল করছেন না। কেন করছেন না ? স্বামী অসত্তুষ্ট থাকার কারণে। এখন অনুমান করুন, স্বামী কে ? এবং স্বামীর মান-মর্যাদা কতটুকু। স্বামীর সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহার কত বড় অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন। তাই স্বামীকে সন্তুষ্ট, রাজি রেখে সব কিছু করতে হবে। আর স্বামী রাজি থাকলে কি হয় শুনুন-
হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাছুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,”যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রামাজান মাসের রোজা রাখে, লজ্জাস্থানের হিফাযত করে, এবং স্বামীর অনুগত থাকে, তাকে বলা হবে-তুমি যে দরজা দিয়ে চাও, জান্নাতে প্রবেশ করো।”
(মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৬৬১)
লেখক: কলামিষ্ট,কবি,সাংবাদিক